# প্রাচীন ভারতে শিক্ষা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: নালন্দা, বিক্রমশিলা, তক্ষশীলা - Quick Revision Note শিক্ষার্থীরা, আজ আমরা প্রাচীন ভারতের গৌরবময় শিক্ষা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি নিয়ে সংক্ষেপে আলোচনা করব, যা তোমাদের TET এবং অন্যান্য প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ## ১. নালন্দা মহাবিহার * **অবস্থান:** বর্তমান বিহার রাজ্যের পাটনা থেকে প্রায় ৯৫ কিমি দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত। * **প্রতিষ্ঠা:** গুপ্ত সম্রাট কুমারগুপ্ত প্রথম (আনুমানিক ৫ম শতাব্দী খ্রিষ্টাব্দ) দ্বারা প্রতিষ্ঠিত। কিছু মতে, এটি আরও প্রাচীন। * **স্বর্ণযুগ:** হর্ষবর্ধনের সময়কালে (৭ ম শতাব্দী খ্রিষ্টাব্দ) নালন্দা তার শিখরে পৌঁছায়। * **শিক্ষাদান পদ্ধতি:** তর্ক, বিতর্ক, শাস্ত্র আলোচনা, ব্যাখ্যা এবং প্রশ্ন-উত্তরের মাধ্যমে শিক্ষাদান করা হত। * **শিক্ষিত বিষয়:** বৌদ্ধধর্ম (মহাযান), হেতুবিদ্যা (যুক্তিবিদ্যা), শব্দবিদ্যা (ব্যাকরণ), চিকিৎসাবিদ্যা, জ্যোতির্বিদ্যা, গণিত, শিল্পকলা, দর্শন, বেদ, উপনিষদ, সাংখ্য, যোগ, ন্যায়, বৈশেষিক ইত্যাদি। * **উল্লেখযোগ্য শিক্ষক:** নাগার্জুন, আর্যভট্ট, ধর্মপাল, শীলভদ্র (হিউয়েন সাং-এর গুরু), চন্দ্রপাল, জ্ঞানচন্দ্র, প্রভামিত্র, স্থিরামাতি, গুণমতি। * **বিদেশী ছাত্র:** চীন, কোরিয়া, জাপান, ইন্দোনেশিয়া, পারস্য এবং মধ্য এশিয়া থেকে ছাত্ররা আসত। হিউয়েন সাং (ইউয়ান চোয়াং) এবং ইৎ-সিং ছিলেন উল্লেখযোগ্য চীনা পরিব্রাজক যারা এখানে অধ্যয়ন করেছিলেন। * **পুস্তকালয়:** ধর্মগঞ্জ (রত্নসাগর, রত্নোদধি, রত্নরঞ্জক) নামে বিশাল গ্রন্থাগার ছিল। * **ধ্বংস:** আনুমানিক ১১৯৩ খ্রিষ্টাব্দে বখতিয়ার খলজি এটি ধ্বংস করেন। ## ২. বিক্রমশিলা মহাবিহার * **অবস্থান:** বর্তমান বিহার রাজ্যের ভাগলপুর জেলার অন্তর্গত আন্টিচক গ্রামে অবস্থিত ছিল। * **প্রতিষ্ঠা:** পাল রাজা ধর্মপাল (আনুমানিক ৮ম শতাব্দীর শেষ ভাগ) দ্বারা প্রতিষ্ঠিত। * **উদ্দেশ্য:** নালন্দার পাশাপাশি বৌদ্ধধর্মের বজ্রযান শাখার প্রসারে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। * **শিক্ষাদান পদ্ধতি:** নালন্দার মতোই উন্নত শিক্ষাদান পদ্ধতি ছিল। * **শিক্ষিত বিষয়:** বিশেষত তন্ত্র ও বৌদ্ধধর্মের বজ্রযান শাখার চর্চা এখানে প্রধান ছিল। এছাড়াও ন্যায়, ব্যাকরণ, জ্যোতির্বিদ্যা, চিকিৎসা, কলা ইত্যাদি বিষয়ে শিক্ষাদান করা হত। * **উল্লেখযোগ্য শিক্ষক:** দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান অতীশ (আচার্য অতীশ) ছিলেন এখানকার একজন প্রখ্যাত অধ্যক্ষ। তিনি তিব্বতে বৌদ্ধধর্ম প্রচারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। * **বিদেশী ছাত্র:** তিব্বত থেকে বহু ছাত্র এখানে আসত। * **ধ্বংস:** বখতিয়ার খলজি এটিও ধ্বংস করেন আনুমানিক ১২০৩ খ্রিষ্টাব্দে। ## ৩. তক্ষশীলা বিশ্ববিদ্যালয় * **অবস্থান:** প্রাচীন গান্ধার রাজ্যের রাজধানী, বর্তমানে পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডি শহরের কাছে অবস্থিত। * **প্রতিষ্ঠা:** এটি নালন্দা বা বিক্রমশিলার মতো সুসংগঠিত আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় ছিল না। এটি ছিল বিভিন্ন গুরুকুলের সমষ্টি যেখানে ছাত্ররা গুরুর বাড়িতে থেকে শিক্ষা লাভ করত। এর উৎপত্তি খ্রিস্টপূর্ব ৭ম শতাব্দী বা তারও আগে। * **স্বর্ণযুগ:** খ্রিস্টপূর্ব ৬ষ্ঠ থেকে ৫ম শতাব্দী এবং খ্রিস্টপূর্ব ৪র্থ শতাব্দীর সময়কালে এটি খুব খ্যাতি লাভ করে। * **শিক্ষিত বিষয়:** বেদ, ব্যাকরণ, চিকিৎসাশাস্ত্র (আয়ুর্বেদ), জ্যোতির্বিদ্যা, যুদ্ধবিদ্যা, রাজনীতি, অর্থনীতি, আইন, কৃষি, বাণিজ্যিক নীতি, শিল্পকলা ইত্যাদি। এটি বিশেষত চিকিৎসা এবং সামরিক শিক্ষার জন্য বিখ্যাত ছিল। * **উল্লেখযোগ্য শিক্ষক ও ছাত্র:** * **চাণক্য/কৌটিল্য:** চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের গুরু এবং অর্থশাস্ত্রের রচয়িতা। তিনি তক্ষশীলার একজন প্রখ্যাত শিক্ষক ছিলেন। * **পাণিনি:** বিখ্যাত বৈয়াকরণিক, অষ্টাধ্যায়ী-এর রচয়িতা। * **জীবক:** বুদ্ধের ব্যক্তিগত চিকিৎসক। * **প্রসেনজিৎ:** কোশলের রাজা। * **চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য:** মৌর্য সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা। * **বিদেশী ছাত্র:** মধ্য এশিয়া এবং পূর্ব এশিয়া থেকে ছাত্ররা আসত। * **ধ্বংস:** এটি মূলত হুন আক্রমণের ফলে খ্রিস্টীয় ৫ম শতাব্দীতে ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। ## পরীক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ/সাধারণত জিজ্ঞাসিত ধারণা: * **নালন্দার প্রতিষ্ঠাতা:** কুমারগুপ্ত প্রথম। * **নালন্দার গ্রন্থাগারের নাম:** ধর্মগঞ্জ। * **হিউয়েন সাং-এর গুরু নালন্দায় কে ছিলেন:** শীলভদ্র। * **বিক্রমশিলার প্রতিষ্ঠাতা:** ধর্মপাল। * **দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান অতীশ কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন:** বিক্রমশিলা। * **কৌটিল্য/চাণক্য কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন:** তক্ষশীলা। * **পাণিনি এবং জীবক কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন:** তক্ষশীলা। * **প্রাচীন ভারতের সবচেয়ে প্রাচীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান:** তক্ষশীলা। * **বখতিয়ার খলজি কোন দুটি প্রধান শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করেন:** নালন্দা ও বিক্রমশিলা। * **নালন্দা কিসের জন্য বিখ্যাত ছিল:** বৌদ্ধধর্ম (মহাযান) এবং তর্কশাস্ত্রের জন্য। * **বিক্রমশিলা কিসের জন্য বিখ্যাত ছিল:** বৌদ্ধধর্মের বজ্রযান শাখার জন্য। * **তক্ষশীলা কিসের জন্য বিখ্যাত ছিল:** চিকিৎসা এবং সামরিক শিক্ষার জন্য। ## ২০টি উদ্দেশ্যমূলক প্রশ্ন (এক শব্দ/এক বাক্য উত্তর) ১. নালন্দা মহাবিহার কে প্রতিষ্ঠা করেন? উত্তর: কুমারগুপ্ত প্রথম। ২. হিউয়েন সাং কোন প্রাচীন ভারতীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়ন করেছিলেন? উত্তর: নালন্দা মহাবিহার। ৩. নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশাল গ্রন্থাগারের নাম কী ছিল? উত্তর: ধর্মগঞ্জ। ৪. বিক্রমশিলা মহাবিহারের প্রতিষ্ঠাতা কে ছিলেন? উত্তর: পাল রাজা ধর্মপাল। ৫. দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান অতীশ কোন শিক্ষাকেন্দ্রের আচার্য ছিলেন? উত্তর: বিক্রমশিলা মহাবিহার। ৬. চাণক্য বা কৌটিল্য কোন প্রাচীন ভারতীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করতেন? উত্তর: তক্ষশীলা। ৭. বিখ্যাত বৈয়াকরণিক পাণিনি কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন? উত্তর: তক্ষশীলা। ৮. জীবক, যিনি বুদ্ধের ব্যক্তিগত চিকিৎসক ছিলেন, তিনি কোন স্থান থেকে শিক্ষা লাভ করেছিলেন? উত্তর: তক্ষশীলা। ৯. কোন মুসলিম সেনাপতি নালন্দা ও বিক্রমশিলা মহাবিহার ধ্বংস করেন? উত্তর: বখতিয়ার খলজি। ১০. নালন্দা মহাবিহার মূলত কোন ধর্মীয় শিক্ষার কেন্দ্র ছিল? উত্তর: বৌদ্ধধর্ম (মহাযান)। ১১. বিক্রমশিলা মহাবিহার বৌদ্ধধর্মের কোন শাখার জন্য বিশেষ পরিচিত ছিল? উত্তর: বজ্রযান শাখা। ১২. তক্ষশীলা বিশ্ববিদ্যালয় বিশেষত কোন দুটি বিষয়ের জন্য বিখ্যাত ছিল? উত্তর: চিকিৎসা ও সামরিক শিক্ষা। ১৩. নালন্দা মহাবিহার বর্তমানে ভারতের কোন রাজ্যে অবস্থিত? উত্তর: বিহার। ১৪. তক্ষশীলা বর্তমানে কোন দেশে অবস্থিত? উত্তর: পাকিস্তান। ১৫. প্রাচীন ভারতে নালন্দা পরিদর্শনে আসা দুজন বিখ্যাত চীনা পরিব্রাজকের নাম লেখো। উত্তর: হিউয়েন সাং এবং ইৎ-সিং। ১৬. নালন্দা মহাবিহার কোন রাজবংশের পৃষ্ঠপোষকতায় গড়ে উঠেছিল? উত্তর: গুপ্ত রাজবংশ। ১৭. বিক্রমশিলা মহাবিহার কোন রাজবংশের পৃষ্ঠপোষকতায় গড়ে উঠেছিল? উত্তর: পাল রাজবংশ। ১৮. কোন সময়ের মধ্যে তক্ষশীলা একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষাকেন্দ্র হিসেবে পরিচিতি লাভ করে? উত্তর: খ্রিস্টপূর্ব ৬ষ্ঠ থেকে ৪র্থ শতাব্দী। ১৯. নক্ষত্রবিদ্যা ও গণিতচর্চার জন্য কোন প্রাচীন বিশ্ববিদ্যালয় বিশেষ পরিচিত ছিল? উত্তর: নালন্দা। ২০. "অর্থশাস্ত্র" গ্রন্থের রচয়িতা চাণক্য কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত ছিলেন? উত্তর: তক্ষশীলা। --- *Last updated: 1/8/2025*
# প্রাচীন ভারতে শিক্ষা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: নালন্দা, বিক্রমশিলা, তক্ষশীলা - Quick Revision Note শিক্ষার্থীরা, আজ আমরা প্রাচীন ভারতের গৌরবময় শিক্ষা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি নিয়ে সংক্ষেপে আলোচনা করব, যা তোমাদের TET এবং অন্যান্য প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ## ১. নালন্দা মহাবিহার * **অবস্থান:** বর্তমান বিহার রাজ্যের পাটনা থেকে প্রায় ৯৫ কিমি দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত। * **প্রতিষ্ঠা:** গুপ্ত সম্রাট কুমারগুপ্ত প্রথম (আনুমানিক ৫ম শতাব্দী খ্রিষ্টাব্দ) দ্বারা প্রতিষ্ঠিত। কিছু মতে, এটি আরও প্রাচীন। * **স্বর্ণযুগ:** হর্ষবর্ধনের সময়কালে (৭ ম শতাব্দী খ্রিষ্টাব্দ) নালন্দা তার শিখরে পৌঁছায়। * **শিক্ষাদান পদ্ধতি:** তর্ক, বিতর্ক, শাস্ত্র আলোচনা, ব্যাখ্যা এবং প্রশ্ন-উত্তরের মাধ্যমে শিক্ষাদান করা হত। * **শিক্ষিত বিষয়:** বৌদ্ধধর্ম (মহাযান), হেতুবিদ্যা (যুক্তিবিদ্যা), শব্দবিদ্যা (ব্যাকরণ), চিকিৎসাবিদ্যা, জ্যোতির্বিদ্যা, গণিত, শিল্পকলা, দর্শন, বেদ, উপনিষদ, সাংখ্য, যোগ, ন্যায়, বৈশেষিক ইত্যাদি। * **উল্লেখযোগ্য শিক্ষক:** নাগার্জুন, আর্যভট্ট, ধর্মপাল, শীলভদ্র (হিউয়েন সাং-এর গুরু), চন্দ্রপাল, জ্ঞানচন্দ্র, প্রভামিত্র, স্থিরামাতি, গুণমতি। * **বিদেশী ছাত্র:** চীন, কোরিয়া, জাপান, ইন্দোনেশিয়া, পারস্য এবং মধ্য এশিয়া থেকে ছাত্ররা আসত। হিউয়েন সাং (ইউয়ান চোয়াং) এবং ইৎ-সিং ছিলেন উল্লেখযোগ্য চীনা পরিব্রাজক যারা এখানে অধ্যয়ন করেছিলেন। * **পুস্তকালয়:** ধর্মগঞ্জ (রত্নসাগর, রত্নোদধি, রত্নরঞ্জক) নামে বিশাল গ্রন্থাগার ছিল। * **ধ্বংস:** আনুমানিক ১১৯৩ খ্রিষ্টাব্দে বখতিয়ার খলজি এটি ধ্বংস করেন। ## ২. বিক্রমশিলা মহাবিহার * **অবস্থান:** বর্তমান বিহার রাজ্যের ভাগলপুর জেলার অন্তর্গত আন্টিচক গ্রামে অবস্থিত ছিল। * **প্রতিষ্ঠা:** পাল রাজা ধর্মপাল (আনুমানিক ৮ম শতাব্দীর শেষ ভাগ) দ্বারা প্রতিষ্ঠিত। * **উদ্দেশ্য:** নালন্দার পাশাপাশি বৌদ্ধধর্মের বজ্রযান শাখার প্রসারে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। * **শিক্ষাদান পদ্ধতি:** নালন্দার মতোই উন্নত শিক্ষাদান পদ্ধতি ছিল। * **শিক্ষিত বিষয়:** বিশেষত তন্ত্র ও বৌদ্ধধর্মের বজ্রযান শাখার চর্চা এখানে প্রধান ছিল। এছাড়াও ন্যায়, ব্যাকরণ, জ্যোতির্বিদ্যা, চিকিৎসা, কলা ইত্যাদি বিষয়ে শিক্ষাদান করা হত। * **উল্লেখযোগ্য শিক্ষক:** দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান অতীশ (আচার্য অতীশ) ছিলেন এখানকার একজন প্রখ্যাত অধ্যক্ষ। তিনি তিব্বতে বৌদ্ধধর্ম প্রচারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। * **বিদেশী ছাত্র:** তিব্বত থেকে বহু ছাত্র এখানে আসত। * **ধ্বংস:** বখতিয়ার খলজি এটিও ধ্বংস করেন আনুমানিক ১২০৩ খ্রিষ্টাব্দে। ## ৩. তক্ষশীলা বিশ্ববিদ্যালয় * **অবস্থান:** প্রাচীন গান্ধার রাজ্যের রাজধানী, বর্তমানে পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডি শহরের কাছে অবস্থিত। * **প্রতিষ্ঠা:** এটি নালন্দা বা বিক্রমশিলার মতো সুসংগঠিত আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় ছিল না। এটি ছিল বিভিন্ন গুরুকুলের সমষ্টি যেখানে ছাত্ররা গুরুর বাড়িতে থেকে শিক্ষা লাভ করত। এর উৎপত্তি খ্রিস্টপূর্ব ৭ম শতাব্দী বা তারও আগে। * **স্বর্ণযুগ:** খ্রিস্টপূর্ব ৬ষ্ঠ থেকে ৫ম শতাব্দী এবং খ্রিস্টপূর্ব ৪র্থ শতাব্দীর সময়কালে এটি খুব খ্যাতি লাভ করে। * **শিক্ষিত বিষয়:** বেদ, ব্যাকরণ, চিকিৎসাশাস্ত্র (আয়ুর্বেদ), জ্যোতির্বিদ্যা, যুদ্ধবিদ্যা, রাজনীতি, অর্থনীতি, আইন, কৃষি, বাণিজ্যিক নীতি, শিল্পকলা ইত্যাদি। এটি বিশেষত চিকিৎসা এবং সামরিক শিক্ষার জন্য বিখ্যাত ছিল। * **উল্লেখযোগ্য শিক্ষক ও ছাত্র:** * **চাণক্য/কৌটিল্য:** চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের গুরু এবং অর্থশাস্ত্রের রচয়িতা। তিনি তক্ষশীলার একজন প্রখ্যাত শিক্ষক ছিলেন। * **পাণিনি:** বিখ্যাত বৈয়াকরণিক, অষ্টাধ্যায়ী-এর রচয়িতা। * **জীবক:** বুদ্ধের ব্যক্তিগত চিকিৎসক। * **প্রসেনজিৎ:** কোশলের রাজা। * **চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য:** মৌর্য সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা। * **বিদেশী ছাত্র:** মধ্য এশিয়া এবং পূর্ব এশিয়া থেকে ছাত্ররা আসত। * **ধ্বংস:** এটি মূলত হুন আক্রমণের ফলে খ্রিস্টীয় ৫ম শতাব্দীতে ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। ## পরীক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ/সাধারণত জিজ্ঞাসিত ধারণা: * **নালন্দার প্রতিষ্ঠাতা:** কুমারগুপ্ত প্রথম। * **নালন্দার গ্রন্থাগারের নাম:** ধর্মগঞ্জ। * **হিউয়েন সাং-এর গুরু নালন্দায় কে ছিলেন:** শীলভদ্র। * **বিক্রমশিলার প্রতিষ্ঠাতা:** ধর্মপাল। * **দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান অতীশ কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন:** বিক্রমশিলা। * **কৌটিল্য/চাণক্য কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন:** তক্ষশীলা। * **পাণিনি এবং জীবক কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন:** তক্ষশীলা। * **প্রাচীন ভারতের সবচেয়ে প্রাচীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান:** তক্ষশীলা। * **বখতিয়ার খলজি কোন দুটি প্রধান শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করেন:** নালন্দা ও বিক্রমশিলা। * **নালন্দা কিসের জন্য বিখ্যাত ছিল:** বৌদ্ধধর্ম (মহাযান) এবং তর্কশাস্ত্রের জন্য। * **বিক্রমশিলা কিসের জন্য বিখ্যাত ছিল:** বৌদ্ধধর্মের বজ্রযান শাখার জন্য। * **তক্ষশীলা কিসের জন্য বিখ্যাত ছিল:** চিকিৎসা এবং সামরিক শিক্ষার জন্য। ## ২০টি উদ্দেশ্যমূলক প্রশ্ন (এক শব্দ/এক বাক্য উত্তর) ১. নালন্দা মহাবিহার কে প্রতিষ্ঠা করেন? উত্তর: কুমারগুপ্ত প্রথম। ২. হিউয়েন সাং কোন প্রাচীন ভারতীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়ন করেছিলেন? উত্তর: নালন্দা মহাবিহার। ৩. নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশাল গ্রন্থাগারের নাম কী ছিল? উত্তর: ধর্মগঞ্জ। ৪. বিক্রমশিলা মহাবিহারের প্রতিষ্ঠাতা কে ছিলেন? উত্তর: পাল রাজা ধর্মপাল। ৫. দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান অতীশ কোন শিক্ষাকেন্দ্রের আচার্য ছিলেন? উত্তর: বিক্রমশিলা মহাবিহার। ৬. চাণক্য বা কৌটিল্য কোন প্রাচীন ভারতীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করতেন? উত্তর: তক্ষশীলা। ৭. বিখ্যাত বৈয়াকরণিক পাণিনি কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন? উত্তর: তক্ষশীলা। ৮. জীবক, যিনি বুদ্ধের ব্যক্তিগত চিকিৎসক ছিলেন, তিনি কোন স্থান থেকে শিক্ষা লাভ করেছিলেন? উত্তর: তক্ষশীলা। ৯. কোন মুসলিম সেনাপতি নালন্দা ও বিক্রমশিলা মহাবিহার ধ্বংস করেন? উত্তর: বখতিয়ার খলজি। ১০. নালন্দা মহাবিহার মূলত কোন ধর্মীয় শিক্ষার কেন্দ্র ছিল? উত্তর: বৌদ্ধধর্ম (মহাযান)। ১১. বিক্রমশিলা মহাবিহার বৌদ্ধধর্মের কোন শাখার জন্য বিশেষ পরিচিত ছিল? উত্তর: বজ্রযান শাখা। ১২. তক্ষশীলা বিশ্ববিদ্যালয় বিশেষত কোন দুটি বিষয়ের জন্য বিখ্যাত ছিল? উত্তর: চিকিৎসা ও সামরিক শিক্ষা। ১৩. নালন্দা মহাবিহার বর্তমানে ভারতের কোন রাজ্যে অবস্থিত? উত্তর: বিহার। ১৪. তক্ষশীলা বর্তমানে কোন দেশে অবস্থিত? উত্তর: পাকিস্তান। ১৫. প্রাচীন ভারতে নালন্দা পরিদর্শনে আসা দুজন বিখ্যাত চীনা পরিব্রাজকের নাম লেখো। উত্তর: হিউয়েন সাং এবং ইৎ-সিং। ১৬. নালন্দা মহাবিহার কোন রাজবংশের পৃষ্ঠপোষকতায় গড়ে উঠেছিল? উত্তর: গুপ্ত রাজবংশ। ১৭. বিক্রমশিলা মহাবিহার কোন রাজবংশের পৃষ্ঠপোষকতায় গড়ে উঠেছিল? উত্তর: পাল রাজবংশ। ১৮. কোন সময়ের মধ্যে তক্ষশীলা একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষাকেন্দ্র হিসেবে পরিচিতি লাভ করে? উত্তর: খ্রিস্টপূর্ব ৬ষ্ঠ থেকে ৪র্থ শতাব্দী। ১৯. নক্ষত্রবিদ্যা ও গণিতচর্চার জন্য কোন প্রাচীন বিশ্ববিদ্যালয় বিশেষ পরিচিত ছিল? উত্তর: নালন্দা। ২০. "অর্থশাস্ত্র" গ্রন্থের রচয়িতা চাণক্য কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত ছিলেন? উত্তর: তক্ষশীলা। --- *Last updated: 1/8/2025*